Wednesday, December 3, 2008
আমাদের আদরের রাজর্ষি
১০ নভেম্বর ২০০৮। সোমবার। আমাদের আনন্দময় দিনগুলোর অন্যতম একটি দিন। আমাদের অতি আদরের ২য় সন্তান রাজর্ষি প্রথম পৃথিবীর আলো দেখলো আজ।
আগের কয়েকদিন থেকেই আয়োজন চলছিল রংপুরে যাবার। আয়োজনটাও ছিল চোখে পরবার মত। বালতি মগ থেকে শুরু করে টিফিন কেরিয়ার কত ধরনের টুকিটাকি জিনিষপত্র কেনা হল তার ইয়ত্তা নেই। আগে থেকেই গাড়ী ভাড়া করা ছিল। যথারীতি গাড়ী বাসার সামনে এসে দাড়ালো। গাড়ী দেখে রাজন্যর সেকি ছুটাছুটি। বারবার আমাকে আর ওর মাকে তাড়া করছিল-'বাবা, তাড়াতাড়ি চল গাড়ী চলে যাবে।' অবশেষে বেলা সাড়ে এগারোটায় রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া গেল। আমি একা। সাথে শুধুমাত্র একজন কাজের মহিলা। ভীষণ দুশ্চিন্তা লাগছে। অবশেষে দুপুর দুটোয় রংপুর পৌছলাম। দেশ ক্লিনিকে ভর্তির যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২২ নম্বর কেবিনে উঠে পড়লাম। শুরু হলো অপারেশনের প্রস্তুতি। ডা: শাহী ফারজানা তাসমীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন চারটায় অপারেশন করবেন। আমি রাজী হলাম না কেননা আমরা দীর্ঘ দুঘন্টার জার্নি শেষে দুটোয় এসে পৌচেছি আর তাছাড়া রক্ত সংগ্রহের বিষয়টিও আছে।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলো সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত এতগুলো সময় কোনদিকে কেটে গেছে ব্যস্ততার জন্যে টের পাইনি মোটেও। ভাগ্য প্রসন্নই বলা চলে কেননা আমরা যাবার পরপরই শিরীন ফুপু ফুপাজি সহ এসেছেন। দুজনেই সার্বক্ষনিক সহায়তা করছেন। সন্ধার দিকে বাবু যোগ দিল আমার সাথে। অনেকটাই দুশ্চিন্তামুক্ত হলাম।
ঘড়ির কাটায় রাত সোয়া এগারোটা। আমি বাইরে গেছি ওষুধ আনবার জন্য। ফিরে এসে দেখি রোজীকে ওটিতে নিয়ে গেছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল ভীষন। মন খারাপ হবার বড় কারনটা হল ও বেশ কদিন থেকেই বলছিল ও বোধহয় এবার ওটি থেকে ফিরবে না। দুশ্চিন্তা অপেক্ষা ছটফট করা এভাবে রাত ১১টা ৫২ মিনিট। ওটির ভিতর থেকে বয় এসে খবর দিল আমাদের নতুন অতিথি এইমাত্র পৃথিবীর মুখ দেখলো। আনন্দে চোখে জল গড়িয়ে পড়ল দুফোটা। শুরু হল নতুন অপেক্ষার। কখন আমাদের নতুন অতিথির মুখ দেখবো।
Subscribe to:
Posts (Atom)